নোভেল করোনাভাইরাস অথবা কোভিড-১৯, আজকের পৃথিবীতে এই শব্দটা জানেনা, এমন মানুষ খুজে পাওয়া যাবে না। মহামারি আকার নেয়া এই ভাইরাসটির আজ পৃথিবী ৭০০ কোটি মানুষের জন্য আতংকের কারণ হয়ে দাড়িছে। ডিসেম্বর-২০১৯ চীনের হুপেই প্রদেশের উহান নগরীতে শনাক্ত করা হয় করোনাভাইরাস। প্রথমে দিকে শুধু মাত্র চিনে মধ্যে বেশষ্ঠিত থাকলেও, আজ এই পোষ্ট পাবলিশের দিন পর্যন্ত আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৩,৩৫,০০০ জন এবং আক্রান্ত দেশের সংখ্যা ১৯২টি, যার মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন প্রায় ১৪,৫০০ বা বেশি। সবচেয়ে ভয়ের কথা হচ্ছে আক্রান্তের হার ক্রমেই বাড়ছে। ১১ মার্চ ২০২০ তারিখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ব্যাধিটিকে একটি বৈশ্বিক মহামারী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
Source: worldmeters info
করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ কি?
করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ হচ্ছে একটি ভাইরাস, যা মানুষের শ্বাসতন্ত্রজনীত গুরুতর রোগের সৃষ্টি করে এবং শ্বাসতন্ত্রজনীত রোগের কারনে তা পরবর্তীতে মানব দেহের বিভিন্ন ইন্দ্রিয়ের সমস্যা তৈরি করে।
করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ লক্ষনসমূহঃ
করোনাভাইরাস আক্রান্তদের উপসগ্র দেখা দিতে ১-১৪ দিন সময় লাগে। সাধারন ফ্লুর মতো উপসর্গ্র দেখা দেয়। জ্বর, সর্দি, কাশি, মাঝে মাঝে গলা ব্যাথা হয়। যা পরবর্তীতে শ্বাসকষ্টের সমস্যা এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে হৃদযন্ত্রের সমস্যা, যেমন বুক ব্যথা বা চেস্ট টাইটনেস হয়ে থাকে। যা পরবর্তীতে ধাপে ধাপে নিউমোনিয়া, একাধিক অঙ্গ বিকল এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে।
Source: Wikipedia
করোনাভাইরাস আক্রান্তের বা সংক্রমনের কারনঃ
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে মূলত কাশি বা হাঁচির ফলে বাতাসে ভাসমান শ্লেষ্মা কণা থাকা ভাইরাসের জিবাণু সুস্থ এক ব্যাক্তির নাক,মুখ অথবা চোখের মধ্যে শরীরে প্রবেশ করে সংক্রমন ছড়ায়। এছাড়া ভাইরাস কণা কাশি বা হাঁচির মাধ্যমে কোনো স্থানে বা টেবিলে বা অন্য কোনও পৃষ্ঠে পরার পর সেই স্থান কোন সুস্থ ব্যাক্তি হাত দিয়ে স্পর্শের মাধ্যমে এবং সেই হাত নাকে, মুখে বা চোখে হাত দিলে ঐ ব্যক্তির শ্লেষ্মাঝিল্লীর মধ্য দিয়ে ভাইরাস দেহে প্রবেশ করতে পারে।
করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ চিকিৎসাঃ
খুবি দুঃখের সাথে জানাতে হচ্ছে, এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ সরাসরি কোন চিকিৎসা বা টিকা বের হয়নি। আক্রান্ত ব্যক্তির রোগের উপর্সগ দেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর কারণ জানতে হলে আমাদের একটু পেছনে তাকাতে হবে। কোভিড-১৯ আসলে সার্স বা মার্স ভাইরাস গোত্রের। যদি সার্স বা মার্স ভাইরাস চিকিৎসা বা টিকা আবিষ্কার হলেও তা কোভিড-১৯ ব্যবহার করা যাচ্ছে না। সহজ বাংলায় তার প্রধান কারণ হচ্ছে, কোভিড-১৯ প্রতিনিত তার রুপ পরিবর্তন করছে। সাইন্টিফিকলি কোভিড-১৯ মানুষের সংস্পশে আসলে তার জেনটিক পরিবর্তন করে, যার ফলে এই সল্পসময়ে বিজ্ঞানীরা এর জন্য সঠিক ঔষধ বা টিকা আবিষ্কার করতে পারিনি। তবে ডাক্তারদের মতামত অনুযায়ী আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই এখন সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভুমিকা রাখছে করোনাভাইরাস থেকে কোন আক্রান্ত ব্যাক্তিকে সারিয়ে তোলার জন্য, এজন্য সুষম খাদ্যভাস, প্রচুর পরিমান পানি পান, ভিটামিন “সি” যুক্ত খাবার গ্রহন বা যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃব্দি করে তা গ্রহন করা জরুরী।
করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ প্রতিরোধঃ
ইংরেজীতে একটা কথা আছে,” prevention is better than cure”। এর করোনাভাইরাসের জন্য এই কথা ১০০% সত্য রুপ নিয়েছে। যেহেতু এখনো এর কোন সঠিক ঔষধ বা টিকা আবিষ্কার হয়নি, প্রতিরোধ এক মাত্র উপায় করোনাভাইরাস থেকে বাচার।
হূ (who-world health origination) মতে ৬টি উপায় অনুসারের মাধ্যমে করোনাভাইরাসকে প্রতিরোধ করা বা নিজেকে বাচানো সম্বভ। জাষ্ট আপনাদের সাধারন জীবনে কিছু পরিবর্তন আপনাকে এবং আপনার পরিবারকে সহয়তা করবে করোনাভাইরাসকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে।
Source: CDC
১) হাত ধোয়ার অভ্যাস করাঃ খুবি খুবি গুরুতপূর্ণ একটি বিষয়। বাহির থেকে আসার পর, অনাকাংখিত কোন কিছু স্পর্স করার পর ভালো করে খারযুক্ত সাবান বা হান্ড ওয়াসার দিয়ে অন্ততো ২০সেকেন্ড হাত ভালো মতো ধুতে হবে। হাত ধোয়ার আগে কোনওভাবে হাত দিয়ে মুখ, নাক অথবা চোখ দয়া যাবে না। এক্ষেত্রে হ্যান্ড সানিটাইজার বা হ্যান্ড রাব একটি ভালো উপায় হাতকে জীবাণুমক্ত করার। ৭০% এলকোহোলযুক্ত হ্যান্ড সানিটাইজার বা হ্যান্ড রাব একটি কার্যকারী উপাদান হাতকে যার্ম মুক্ত করার। এখানে বলা বাঞ্ছনীয়, একটা ছোট হ্যান্ডসানিটাইজার বা হ্যান্ড রাব আমাদের সকলের সাথেই বহন করা দরকার। কারন হ্যান্ডসানিটাইজার বা হ্যান্ড রাব করার জন্য কোন পানি বা কিছুর দরকার হয় না। ২/৩ ফোটা বা ব্যবহারের উপর নির্ভর করে ভালোমত মেখে নিলেই হয়।
২) হাইজেনিক থাকাঃ হাছি বা কাসি দেবার সময় টিস্যু বা ডিস্পোসাল ফ্রব্রিক দিয়ে নাক এবং মুখ ঢাকা। বাবহারে পর টিস্যু বা ডিস্পোসাল ফ্রব্রিক যথা স্থানে ফেলা এবং তারপর হাত ধুয়ে ফেলা বা হ্যান্ড সানিটাইজার ব্যবহার করা। মুখেয় মাস্ক ব্যবহার করা, যদিও মাস্ক ব্যবহার আক্রান্ত ব্যক্তি করা উচিত।
৩) সামাজিক দূরত্ব বঝায় রাখাঃ হূ-এর সামাজিকভাবে একজন আর একজনের সাথেয় মতে নূন্যতম ১মিটার বা ৩ ফিট দূরত্ব বঝায় চলাচল বা অবস্থান করা উচিত। এটি অনেক গুরুতপূর্ণ। আমরা প্রায়ই সামাজিক দায়ব্ধতার কারনে এই নিয়মটি মানি না। কিন্তু এখনকার অবস্থা এই নিয়মটি অব্যশই অনুসরণ করতে হবে। কর্মদন থেকে বিরত থাকতে হবে।
৪) কিছু স্থান স্পর্শ না করাঃ আপনার মুখ, নাক অথবা চোখ হাত দিয়ে স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুনস। খুব প্রয়োজনী হলে ভাল করে হাত পরিষ্কার করে অথবা টিস্যু ব্যবহার করে স্পর্শ করুন।
৫) চারপাশ পরিস্কার রাখাঃ ঘর বা অফিসের চারপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে। যে কোণ স্থান যা মানুষ সাধারনত স্পর্শ করে তা ঘনঘন এন্টিব্যাক্টিরিয়াল বা ক্ষারজাতিও পদার্থদ্বারা পরিষ্কার রাখতে হবে।
৬) একাকি অবস্থান করাঃ কোন অবস্থা নিজেকে আক্রান্ত মনে হলে, সকলের কাছ থেকে দূরত্ব বঝায় রেখে একাকি থাকতে হবে। আপনি যদি সত্যি আক্রান্ত হন, আপনার জন্য পরিবারের বা বন্ধুদের কেউ আক্রান্ত না হয় তার জন্য এটা করা জরুরি। একে বলা হয় হোম কোয়ারেন্টাইন। কোন ভাবে আপনার স্পর্শ করা কিছু অন্য কেউ স্পর্শ না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আক্তান্তের অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযগ করতে হবে। এক্ষেত্রে ঘর থেকে বের না হয়ে হেল্পলাইনে যোগাযোগ করে ডাক্তারের পরামর্শ বাঞ্ছনীয়।
এছাড়া আক্রান্ত দেশ থেকে আগত যে কারো কাছ থেকে দূরে থাকবেন, এমনকি সে যদি আপনার পরিবারের কেউ হয় তারপর। বিদেশ থেকে ফেরার পর অনন্ত ১৪দিন বিদেশ ফেরত ব্যক্তির সেলফ কোয়ারেন্টাইন থাক উচিত, এটি শুধু আপনাকে নয়, আপনার পরিবার, দেশ ও জাতির সুরক্ষার জন্য করতে হবে।
যদি এখন পর্যন্ত মৃত্যুর হার আক্রান্তের তুলনায় কম, তবু নতুন ভাইরাস বলে এর আক্রমনের ভয়াবহতা এখনো নিধারিতভাবে বলা যাচ্ছে না। সর্তকতা হচ্ছে সবচেয়ে বড় উপায় একে প্রতিরোধ করা।
আর একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, অনলাইন বা সোসাল মিডিয়া অনেক ধরনের বিভ্রান্তিমূ্লক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, এই সব তথ্যতে বিভ্রান্ত না হয়ে বিশ্বাসযোগ্য সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করুন। প্রয়োজনে ডাক্তারের সাথে অথবা সরকার প্রদত্ত হেল্পলাইনে যোগাযোগ করুন।
তথ্য সুত্রঃ
ছবিঃ গুগল
If you are to simply hire a writer to assist you, you will never learn whether your writing
Most affordable-papers.net pupils get their school library to their research needs.
will be up to par.