বর্তমান সময়ে আমরা সবাই একটি নামের সাথে খুবই পরিচিত সেটা হলো অ্যাক্টিভেটেড চারকোল / কার্বন। তবে প্রাচীন সময় থেকে এর ব্যবহার প্রচলিত আছে আর সেটি ডিটক্স ডায়েট হিসেবে পরিচিত ছিলো।
ডিটক্স হলো এমন একটা প্রক্রিয়া যার সাহায্যে বিভিন্ন টাটকা শাকসবজি ও ফলমূলের জোস এর মাধ্যমে শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করা।
আর এই ডিটক্স প্রক্রিয়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অ্যাক্টিভেটেড চারকোল ।
জেনে রাখা ভালো অ্যাক্টিভেটেড চারকোল / অ্যাক্টিভেটেড কার্বন দু’টোই একই পদার্থ।
★★ অ্যাক্টিভেটেড চারকোল / কার্বন
যে কোন জৈব পদার্থ(যা একসময় জীবিত ছিল) পুড়িয়ে কয়লা বানানো যায়। এটা কাঠ, নারিকেলের ছোবড়া কিংবা জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে পাওয়া যায়। কয়লার উৎস যেটাই হোক, একে অ্যাক্টিভেটেড বা সক্রিয় কার্বন তখনই বলা যাবে যখন অনেক উচ্চতাপে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে এর অভ্যন্তরীণ অবস্থার পরিবর্তন ঘটানো হয়।
★কখন ব্যবহার করবেন
সারাদিন ধরে চারপাশের টক্সিক বা দূষিত উপাদানগুলো আমাদের লোমকূপ বন্ধ করে ফেলে। লোমকূপের গোঁড়া পরিষ্কার না থাকলে মুখের রঙ ডার্ক লাগে। অ্যাক্টিভেটেড চারকোল-সমৃদ্ধ মাস্ক মুখে অ্যাপ্লাই করলে সেটা মুখের লোমকূপ বা পোরস এর ভিতরের ধুলা-ময়লা, মৃতকোষে আটকে যায়। এরপর সেই মাস্ক টেনে তোলার সময় তা ঐসব উপাদান সহ উঠে আসে। এর ফলে লোমকূপগুলো বেশি বড় দেখা যায় না।
অ্যাক্টিভেটেড চারকোল ত্বক থেকে ব্যাকটেরিয়া, কেমিক্যাল, দূষিত পদার্থ, ধুলাবালি এবং অন্যান্য মাইক্রো-পারটিকেল শুষে নেয়। এই চারকোল শরীরে শোষিত হয় না সুতরাং শরীরে এর কোন বিরূপ প্রভাব ও পড়ে না।
অতিরিক্ত কার্বন পিল অফ মাস্ক ব্যবহারে স্কিনের লং টার্ম ড্যামেজের স্বীকার হতে হয়।
কারণ এটি আপনার লোমকূপ থেকে টক্সিক পদার্থ বের করে আনার পাশাপাশি আপনার ত্বকে উৎপন্ন হওয়া ন্যাচরাল তেল কেও বের করে আনে । যার কারণে আপনার ত্বক মসৃণ অনুভব হলেও শুষ্ক হয়ে যায়।
তাই অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বকে সপ্তাহে ২বার এবং নরমাল ত্বকে সপ্তাহে ১বার ব্যবহার করুন।
তবে এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে সফট চারকোল মাস্ক ব্যবহার করার দিকে।
এসব মাস্ক এবং ক্লিনজার মুখ ক্লিন করে আর স্ক্রাব স্কিনকে খুব ভাল এক্সফলিয়েট করে। যেমন Freeman,The Bodyshop, Beauty Formula, Bioré এগুলো অনেক বিখ্যাত ব্র্যান্ড এবং এদের ইউজার রিভিউ ও অনেক নির্ভরযোগ্য।
★★ অ্যাক্টিভেটেড চারকোল/ কার্বনের কার্যকারীতা
১) একনি,পিম্পল সমস্যা : ওয়েলি স্কিনে পোরস, একনি ও পিম্পলের মত সমস্যা যেন লেগেই থাকে। আর তা দূর করতে ব্যবহার করুন অ্যাক্টিভেটেড চারকোল। প্রতিদিনের ফেসওয়াশে এক চিমটি চারকোল পাউডার যোগ করে দিলেই তা ডিপ ক্লিনজিং এর জন্য সাহায্য করবে। সেই সাথে বাইরের ধুলাবালি, ময়লা গভীর ভাবে তুলে ফেলতে সাহায্য করবে।
২) আন্ডার- আর্ম ডার্ক প্যাচেস : চারকোল পাউডারের সাথে লেবুর রস যোগ করে নিয়মিত স্ক্রাব করুন আন্ডার আর্মে। দুর্গন্ধ দূর হওয়ার পাশাপাশি কালো দাগও দূর হবে।
৩) ব্রণ দূরীকরণ : এক চামচ মধু ও এক চামচ চারকোল পাউডার একসঙ্গে মেশান। মিশ্রণটি ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। ৫ মিনিট পর ফেসওয়াশ দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ত্বক। এটি ব্রণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে।
এছাড়া অ্যালোভেরার সঙ্গে চারকোল পাউডার মিশিয়েও তৈরি করতে পারেন ফেসপ্যাক। এক চা চামচ অ্যাক্টিভেটেড চারকোলের সঙ্গে এক টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে নিন। মুখ এবং ঘাড়ের ত্বকে মিশ্রণটি লাগিয়ে রাখুন। ১০ মিনিট পর ভেজা কাপড় দিয়ে মাস্কটি উঠিয়ে ফেলুন।
৪) ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে : এক চা চামচ অ্যাক্টিভেটেড চারকোলের সঙ্গে আধা চা চামচ আপেল সিডার ভিনেগার এবং ১ টেবিল চামচ পানি মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াবে।
চারকোল পাউডারের সঙ্গে গোলাপজল মিশিয়ে ত্বকে লাগালেও উপকার পাবেন।
এখন আপনাদের প্রশ্ন জাগছে হয়তো কোথায় পাবেন অ্যাক্টিভেটেড চারকোল পাউডার?
আপনি যেকোনো ফার্মেসী কিংবা ভেষজ পণ্যের দোকানে সন্ধান করলেই পেয়ে যাবেন অ্যাক্টিভেটেড চারকোল ট্যাবলেট কিংবা পাউডার। রূপচর্চা নিয়ে আমাদের আর কিছু টিপস পেতে ক্লিক করুন এখানে ।
লেখকঃ জাহান জিনাত( বিউটি অ্যাডভাইজার কারনেসিয়া )
তথ্য ও ছবিঃ গুগোল