ব্রোঞ্জার, আমরা মেকাপ প্রেমীদের কাছে পরিচিত একটি মেকাপ আইটেম। ব্রোঞ্জার ছাড়া মেকাপ শেষ হয়েও হয় না। অনেকেই এখন আমার এই কথা শুনে বলতে পারেন কন্ট্রোরিং তো করি ব্রোঞ্জার নিয়ে না ভাবলেও চলবে। আপনি যদি এরকম কিছু ভেবে থাকেন তাহলে আপনার ধারণাটা ভুল খানিকটা।
আপনি যখন রাতের কোনো প্রোগ্রামের জন্য মেকাপ করবেন কেবল তখনই আপনি কন্টোরিং করবেন। কারণ ঐ সময়টাতে ন্যাচরাল আলো থাকে। সাজসজ্জার হরেক রকম লাইটের মাঝে আপনার ফেইসের শার্পনেস ফুটিয়ে তোলার জন্য কন্টোরিং মাস্ট।
আর ব্রোঞ্জার আপনি দিনে বা রাতে যেকোনো সময়ই ব্যবহার করতে পারেন আপনার পছন্দমত।
এখন আবার অনেকেই ভাবছেন, ব্রোঞ্জিং ছাড়াই তো আমার মেকাপ লুক সুন্দর হয় তাহলে ব্রোঞ্জারের কি দরকার। তাহলে আপনাকে বলবো একদিন সঠিক ভাবে ব্রোঞ্জিং করে মেকাপ করে দেখুন পার্থক্যটা আপনি নিজেই বুঝবেন।
তাহলে জানা যাক, ব্রোঞ্জারের ব্যবহার সম্পর্কে।
★★ ব্রোঞ্জারের ব্যবহার
১) স্কিনটোনের সাথে মিলিয়ে নেওয়া : ব্রোঞ্জার কেনার সময় আপনার মাথায় রাখতে হবে ওটা শেড সম্পর্কে। সাধারণত আপনার স্কিনটোনের চেয়ে ২ শেড ডার্ক নিলেই একটা পারফেক্ট ব্রোঞ্জার হয়ে যাবে আপনার জন্য। আপনি যদি কন্টোর একে বারেই ব্যবহার করতে না চান তাহলে ৩শেড ডার্ক নিতে পারেন। এতে করে আপনি শার্প ব্রোঞ্জিং করে নিতে পারবেন।
২) স্কিন টাইপ : ব্রোঞ্জার স্কিন টাইপের উপর খুব বেশী প্রভাব ফেলে না। তবে আপনার ত্বক যদি খুব বেশী তৈলাক্ত কিংবা খুব বেশী শুষ্ক হয় তাহলে একটি ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।
আপনার ত্বক যদি নরমাল / তৈলাক্ত হয় তাহলে পাউডার ব্রোঞ্জার ব্যবহার করুন। আর ত্বক ড্রাই হলে ক্রিম বেজ ব্রোঞ্জার ব্যবহার করুন। কারণ ড্রাই স্কিনে খুব বেশী পাউডার ব্যবহার করলে মেকাপ ছোপ ছোপ হয়ে যায়।
৩) ব্রোঞ্জার ব্রাশ : ব্রোঞ্জার করার সময় অবশ্যই ব্রোঞ্জার ব্রাশের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। পারফেক্ট ব্রোঞ্জিং এর জন্য এঙ্গেল ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে।
৪) পাউডার ব্যবহারের পর: মুখে ফাউন্ডেশন ব্যবহারের পর পরই ব্রোঞ্জিং করবেন না। এতে আপনার ফাউন্ডেশন ব্রোঞ্জিং অংশ থেকে সরে যাবে এবং ব্রোঞ্জারও সেট হবে না।
তাই ফাউন্ডেশন ব্যবহারের পর একটি পাউডার দিয়ে ভালোভাবে সেট করে নিয়ে এরপর ব্রোঞ্জার ব্যবহার করুন।
৫) নির্দিষ্ট এরিয়াতে ব্রোঞ্জিং করুন : আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না ব্রোঞ্জার কোন পয়েন্টে করবো। ব্রোঞ্জিং করার সঠিক পয়েন্ট হলো কন্টোরিং পয়েন্ট মানে আপনার কান থেকে নিচে চোয়ালের দিকে এবং আপনার হেয়ার লাইন, জ- লাইন এই কয়েকটি পয়েন্টে ব্রোঞ্জার ব্যবহার করতে হবে।
৬) কন্টোরের পর : ফাউন্ডেশন ব্যবহারের পর সেট করার জন্য যেমন পাউডারের দরকার হয় ঠিক তেমনই আপনার কন্টোর কে সেট করার জন্য অল্প ব্রোঞ্জার ব্যবহার করুন। এতে করে আপনার কন্টোর লাইন ভ্যানিস হবে।
৭) পরিমান মতো ব্যবহার করুন : মেকাপের সময় এটি অবশ্যই মাতায় রাখতে হবে সেটা হলো আপনার সব প্রোডাক্ট যেন পরিমান মতো ব্যবহার হয়। অতিরিক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করে ব্রোঞ্জিং করলে মেকাপ দেখতে সুন্দর লাগে। তাই একটু সময় নিয়ে অল্প অল্প প্রোডাক্টস নিয়ে ব্রোঞ্জিং করুন।
৮) ব্লেন্ডিং : মেকাপের জন্য ব্লেন্ডিং আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যত ভালো ব্লেন্ডিং করবেন মেকাপ তত বেশি ফ্ল- লেস লাগবে। অল্প প্রোডাক্টস নিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ডিং করে এরপর আবার অল্প প্রোডাক্ট নিন এবং ব্লেন্ডিং করুন। এভাবে অল্প অল্প প্রোডাক্ট নিয়ে ব্রোঞ্জিং শেষ করুন।
৯) অতিরিক্ত শিমার ব্রোঞ্জার : আমরা অনেকেই মেকাপে একটু গ্লোয়ি লুক পছন্দ করি তাই বেশীরভাগ আইটেম একটু শিমারী ব্যবহার করতে পছন্দ করে থাকেন। তবে একটি বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে আপনার ব্রোঞ্জার যেন অতিরিক্ত শিমারী না হয় এতে ব্রোঞ্জিং ভালো দেখায় না।
১০) গলায় ব্রোঞ্জিং করা : মেকাপ করার সময় আমাদের সবার চিন্তা থাকে মেকাপটা মেকি লাগছে না তো? কিংবা কেউ বলবে না তো বেশী মেকাপ করেছি?
এসব চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে আপনার গলায় ব্রোঞ্জার ব্যবহার করা আবশ্যক। গলার দু পাশে হালকা একটু ব্রোঞ্জিং করে নিলেই আপনার মুখের মেকাপের সাথে গলার শেড মিলবে৷
★★ব্রোঞ্জার সাজেশন
W7 make up bronzer, Elf, Sleek, L.A girl, milani এই ব্রোঞ্জার গুলো ড্রাগস্টোরের মধ্যে বেস্ট। তবে আমার পার্সোনেলি W7, L.A girl এবং Milani এই তিনটা ব্র্যান্ডের ব্রোঞ্জার খুবই ভালো লেগেছে। এগুলোর পাউডারি ট্যাশ্চার কম হওয়ার কারণে ব্যবহার করতে খুবই সুবিধা হয় এবং ব্লেন্ডিং করতেও খুব বেশি সময় লাগে না।
Best face bronzer কিনতে ভিজিট করুন carnesia.com এই ওয়েবসাইটে৷
সবক’টা টিপস মেনে একবার ব্রোঞ্জিং করুন দেখবেন ব্রোঞ্জার ছাড়া মেকাপ এবং ব্রোঞ্জিং করা মেকাপের মধ্যে কত পার্থক্য।
লেখকঃ তাঞ্জিলা কামাল ( প্রোডাক্ট এক্সপার্ট কারনেসিয়া )
তথ্য ও ছবিঃ গুগোল