সিরাম শব্দটার সাথে কম বেশী আমরা সবাই পরিচিত। কিন্তু আমাদের সবার মধ্যেই সিরাম নিয়ে হাজারো প্রশ্ন থাকে। যেমন, সিরাম কবে ব্যবহার করবেন? কেন ব্যবহার করবেন? ময়েশ্চারাইজার কিংবা ক্রিম ব্যবহার করলে সিরামের প্রয়োজনীয়তা আছে নাকি? এছাড়া, অনেকে তো মনে করে সিরাম মানেই বাড়তি খরচ। যদি এই ধারনাটি আপনার মধ্যেও থাকে তাহলে বলবো আজকের এই ব্লগ টি সম্পূর্ণ পড়ুন। তাহলে আপনার সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
সিরাম কেন ব্যবহার করবেন এটা জানার আগে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে সিরাম কি??
তাহলে চলুন জানা যাক।
সিরাম এমন একটা প্রোডাক্ট যা খুব ছোট ছোট মলিকিউলস দিয়ে তৈরী। যার কারণে এটি আপনার ত্বকে খুব তাড়াতাড়ি মিশে যায়।
মলিকিউলস গুলো শক্তিশালী উপাদান দিয়ে তৈরী যা খুব দ্রুত কার্যকরী ভূমিকা রাখে আপনার স্কিনকেয়ারে।
সিরাম ব্যবহার করতে হবে ময়েশ্চারাইজ়ারের আগে ত্বক পরিষ্কার করে। সিরাম ত্বকের গভীরে গিয়ে বলিরেখা বা নিষ্প্রাণ ত্বকের সমস্যার বেশকিছু সমস্যার সমাধান করে। আর ময়েশ্চারাইজ়ার সিরামের উপর একটা আস্তরণ তৈরি করে সিরামের গুণগুলিকে রক্ষা করে।
★★ সিরাম বাছাই প্রক্রিয়া
অনেকেই বলতে শুনি সিরাম তার স্কিন কেয়ারে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে না। তাই সিরাম ব্যবহার করা বন্ধ করে দেন। এটার প্রধান কারণ হলো, সিরাম কেনার আগে আপনি আপনার ত্বকের দিকে নজর দেন নি। কারণ ত্বকের উপর ভিত্তি করে ভিন্ন ভিন্ন সিরাম আছে। সিরাম নিতে হলে অবশ্যই সিরামের উপাদান সমূহ দেখে নিন, এটি আপনার ত্বকে কতটুকু কার্যকরী হবে তা বুঝতে।
চলুন আপনাদের জন্য বাছাই প্রক্রিয়াটা আরেকটু সহজ করে দিই।
১) ব্রণ-ফুসকুড়ি বেশি হয় এমন ত্বকের জন্য বেছে নিন, ভিটামিন-C, জ়িঙ্ক, স্যালিসিলিক অ্যাসিড ও রেটিনলযুক্ত সিরাম। জ়িঙ্ক ত্বকের জ্বালাভাব ও অস্বস্তি দূর করে। রেটিনল ফোলাভাব কমায়। স্যালিসিলিক অ্যাসিড লোমকূপ পরিষ্কার করে। ভিটামিন-C ত্বকে তেল উৎপাদন প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে।
২) শুষ্ক ত্বকের জন্য বেছে নিন, ভিটামিন-E, গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ও হাইড্রোলিক অ্যাসিডযুক্ত সিরাম। এর উপাদানগুলি ত্বককে ময়েশ্চারাইজ় করে, এক্সফোলিয়েট করে এবং ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়িয়ে ত্বককে করে তোলে কোমল।
৩) নিষ্প্রাণ ত্বকের জন্য বেছে নিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টযুক্ত সিরাম। গ্রিন-টি এক্সট্র্যাক্ট রয়েছে এমন সিরাম ব্যবহার করলে ত্বক ধীরে ধীরে হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত।
৪) ত্বকের কোঁচকানো ভাব কম করতে পেপটাইডসমৃদ্ধ সিরাম বাছাই করা উচিত। এর ফলে, কোলাজেন ও ইলাস্টিন উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং ত্বক হয়ে ওঠে টানটান।
সিরাম তো কেনা হলো এবার জেনে নেই এটি কিভাবে ব্যবহার করবেন।
★★সিরামের ব্যবহার
আপনার ত্বকের গভীরে উপাদানকে পৌঁছে দিতে সাহায্য করে সিরাম। তাই সিরাম ব্যবহারের পূর্বে ভালোভাবে ত্বক পরিষ্কার করে নিতে হবে।
সিরাম ব্যবহার করতে হয় ময়েশ্চারাইজারের আগে। এটা মনে রাখতে হবে ময়েশ্চারাইজারের বিকল্প কিন্তু সিরাম না।
সিরামের শক্তিশালী উপাদানের কারণে সিরামের ঘনত্ব বেশী হয় তাই খুবই অল্প পরিমানে নিয়ে হালকা হাতে স্কিনে ম্যাসাজ করে নিতে হবে। এতে করে ত্বক তাড়াতাড়ি শোষণ করে নিবে।
সিরাম আপনার ত্বকে দ্রুত কাজ করে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দেয়। ত্বকের গভীরে গিয়ে ত্বকের আর্দ্রতা বাড়িয়ে দেয়। যা আপনার ত্বককে শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করে এবং সহজেই বয়সের ছাপ পড়া থেকে রক্ষা করে। এটি আপনার দাগছোপ, ডার্ক সার্কেল এবং ফোলা ভাব কমাতেও কার্যকরী।
প্রতিদিন দিনে ২বার কিংবা ১বার ব্যবহার করতে পারেন সিরাম।
প্রথমে আপনার ত্বককে ভালোভাবে পরিস্কার করে আপনার পছন্দের টোনার লাগিয়ে নিন।
এরপর কয়েক ড্রপ সিরাম মুখে লাগিয়ে হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
আপনার ত্বকের যত্নে সিরাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই স্কিনকেয়ারের বাকী প্রোডাক্টসের সাথে সিরামও আবশ্যক। সুস্থ, প্রানবন্ত ত্বক পেয়ে যান খুবই সহজে। Best skin serum পেতে ভিজিত করতে পারেন কারনেসিয়া ওয়েবসাইট ।
লেখকঃ তাঞ্জিলা কামাল ( প্রোডাক্ট এক্সপার্ট কারনেসিয়া )
তথ্য ও ছবিঃ গুগোল