যদি আমাকে বলা হয় ১/২ টা প্রোডাক্টস ব্যবহার করে মেকাপ লুক সম্পূর্ণ করতে তাহলে ১টা প্রোডাক্টস আমি অবশ্যই নিবো। সেটা হলো লিপস্টিক। হ্যাঁ, আমার মতো অনেকেই খুব বেশী না সেজে ১/২টা প্রোডাক্টস ব্যবহার করেন সাথে লিপস্টিকের হালকা টাচ আপ রাখেন।
আবার আপনি সব প্রোডাক্টস ব্যবহার করে মেকাপ লুক করলেন কিন্তু কোনো লিপস্টিক ব্যবহার করলেন না তাহলেও দেখবেন আপনার মনে হবে লুক অসম্পূর্ণ।
এককথায় বলতে গেলে লিপস্টিক মেকাপের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস৷
আর সেই লিপস্টিক নিয়েই আমরা প্রতিদিন একটাই সমস্যায় থাকি।সেটা হলো খুব তাড়াতাড়ি সরে যাওয়া।
আমাদের অনেকেই প্রশ্ন করেন, আমি ভালো ব্র্যান্ডের লিপস্টিক ব্যবহার করি তাও কেন লিপস্টিক লং লাস্টিং হয় না? আবার অনেক সময় দেখা যায় ঠোঁটের চারপাশে লিপস্টিক আছে কিন্তু মাঝের অংশটুকু থাকে না। যার কারণে কোথাও গেলে একটু পর পর লিপস্টিকের দিকে খেয়াল রাখতে হয় আর টাচ আপ দিতে হয় যেটা খুবই বিরক্তি কর মনে হয়।
আপনাদের এই সমস্যার সমাধান পাবেন আজকের এই ব্লগে।
চলুন তাহলে জানা যাক লিপস্টিক কিভাবে লং লাস্টিং রাখবেন।
★★লিপস্টিক লং লাস্টিং রাখার ৭টি সহজ ও কার্যকরী ট্রিকস
১)ঠোঁটের Exfoliate করা: কুসুম গরম পানিতে টুথ ব্রাশটি ভিজিয়ে নিন যাতে নরম হয়ে যায়, এবারে ঠোঁটের উপর সার্কুলার মোশনে টুথব্রাশটি হালকা হাতে বোলাতে থাকুন। এতে ঠোঁটের উপরের মরা চামড়া অনায়াসে উঠে আসবে। এই কাজটি খুব সাবধানে করবেন তা না হলে কিন্তু ঠোঁট ফেটে যেতে পারে এবং রক্তপাত হতে পারে। যে টুথব্রাশটি প্রতিদিন ব্যবহার করেন সেই টুথব্রাশটি দিয়েই এই কাজটি করতে পারেন।
অন্যথা, ভালো কোনো ব্র্যান্ডের Lips Exfoliator ব্যবহার করতে পারেন।
২) ময়েশ্চারাইজ করা : ঠোঁট Exfoliate করলে অনেকটা ড্রাই হয়ে যায় তাই এরপর লিপ বাম / লিপ থ্যারাপি ব্যবহার করে নিতে পারেন। এতে আপনার ঠোঁট ময়েশ্চারাইজ থাকবে আর নমনীয় করবে লিপ্সকে।
৩) লিপ প্রাইমার : একটি ভালো ব্র্যান্ডের লিপ প্রাইমার ব্যবহার করুন। ঠোঁটের চার ধারেও লাগাতে ভুলবেন না। এতে ঠোঁটের উপর একটা বেস তৈরি হয় যাতে। লিপ প্রাইমার আপনার লিপস্টিককে লক করে দীর্ঘক্ষণ ধরে রাখতে সাহায্য করবে।
৪) ফাউন্ডেশন ব্যবহার : লিপস্টিক ব্যবহার করার আগে অবশ্যই ঠোঁটের চারপাশে অল্প ফাউন্ডেশন নিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিন।
এতে ঠোঁটে মসৃণ ভাব আসবে যা লিপস্টিক কে সেট রাখতে সাহায্য করবে।
৫)লিপ লাইনার ব্যবহার করুন : ঠোঁটের বেস তৈরি হয়ে গেলে এবার পালা ঠোঁটের আকার ঠিক করার। যাদের ঠোঁটের শেপ ঠিক নয়, তাঁরা লিপ লাইনারের সাহায্যে ঠিক করে নিতে পারেন। আবার অনেকের ঠোঁট খুব পাতলা হয় বা মোটা হয়, রি-ডিফাইন করার জন্য কিন্তু লিপ লাইনার দিয়ে আউটলাইন টেনে নিতে পারেন। যে রঙের লিপস্টিক লাগাবেন, সেই একই শেডের লিপ লাইনার দিয়ে ঠোঁটের আউটলাইনটা করে নিন। যদি একই শেডের লিপ লাইনার না থাকে তাহলে কাছাকাছি শেডের লিপ লাইনার লাগাতে পারেন।
৬) লিপস্টিক এপ্লাই করা : এবার আপনার ঠোঁট পুরোপুরি প্রস্তুত লিপস্টিক লাগানোর জন্য।এবার আপনার পছন্দ মতো লিপস্টিক লাগিয়ে নিন।
এক্ষেত্রে খেয়াল লাগবেন প্রয়োজনের বেশী প্রোডাক্টস যেনো লাগানো না হয়,তাহলে লিপস্টিক ঠোঁটে বসবে না এবং একটু পর ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
তাই দীর্ঘক্ষণ ঠোঁটে লিপস্টিক রাখতে হলে এটা আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
৭) সর্বশেষ টাচ আপ : আপনার ঠোঁট যদি খুব বেশী শুষ্ক হয় ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে ঠোঁটের মাঝের অংশে হালকা একটু lip gloss ব্যবহার করে নিতে পারেন।
আর যদি সেমি-ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার করেন তাহলে অনেকেই লিপস্টিক একটু গ্লসি দেখানোর সমস্যায় পড়েন। সেক্ষেত্রে, লিপস্টিক লাগানোর পর একটা টিস্যু পেপার নিয়ে আপনার ঠোঁটের উপর ড্যাব করে চেপে নিন এরপর হালকা একটু পাউডার লাগিয়ে নিন। এতে দেখবেন আপনার লিপস্টিকের গ্লসি ভাব চলে গিয়ে মসৃণ এবং ম্যাট লুক দিচ্ছে।
পারফেক্ট মেকাপ করার আগে যেমন ত্বক ক্লিন করে,ময়েশ্চারাইজ করে বেস তৈরী করা গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ আপনার লিপস্টিক লাগানোর আগে বেস তৈরী করা। তাহলেই আপনি লিপস্টিক নিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হবেন না। ঠোঁট থাকবে সুন্দর আপনার পছন্দের লিপস্টিকে।
লেখকঃ ইফতিহা জান্নাত ( বিউটি এক্সপার্ট কারনেসিয়া )
তথ্য ও ছবিঃ গুগোল